Inspiring Ten Winner Banner
/winners/banner/মোস্তাফা-আল-মমিন.png

ছুটে চলছে তাঁর স্বপ্নের বৈদ্যুতিক গাড়ি ‘পালকি’

জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানার গুঠাইল নদপারের ছেলে মোস্তাফা আল মমিন। ২০০৯ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন একটি গাড়িকে কনভার্ট করে বানান তাঁর প্রথম সোলার ইলেকট্রিক গাড়ি। এরপর উচ্চতর পড়াশোনার জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। মন্টানা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। দেশে ফিরে লক্ষ্য স্থির করেন—ঢাকার দূষণ কমানো ও চালকদের জীবনমান উন্নত করার জন্য বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করবেন।

এই স্বপ্ন পূরণে ২০২২ সালে মাত্র সাড়ে চার লাখ টাকা পুঁজিতে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশের প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি ডিজাইন ও ম্যানুফ্যাকচারিং স্টার্টআপ ‘পালকি মোটরস’। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কারখানা ঢাকার উত্তর বাড্ডায় অবস্থিত। গত দুই বছরে পালকি মোটরস ২৪টি গাড়ি সরবরাহ করেছে, যা চলেছে প্রায় ১৭ লাখ কিলোমিটার এবং বাঁচিয়েছে ৫৫০ টনের বেশি কার্বন নিঃসরণ। স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ তৈরি করায় খরচ আমদানিনির্ভর গাড়ির তুলনায় ৬৪ শতাংশ কম। মাসে সর্বোচ্চ আটটি গাড়ি তৈরির রেকর্ডও রয়েছে।

রাইড শেয়ারিং চালকদের জন্য এ সমাধানে জ্বালানি খরচ ৯০ শতাংশ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে একজন চালক আগের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি আয় করছেন। সাধারণ ডিজেলচালিত গাড়িতে কিলোমিটারপ্রতি খরচ পড়ে ১০ টাকা, আর পালকির গাড়ি এক কিলোমিটার চলে মাত্র ১ টাকা ৬৩ পয়সায়।

১৪৪ ভোল্ট লিথিয়াম আয়রন ফসফেট (এলএফপি) ব্যাটারিযুক্ত ‘পালকি’ এক চার্জে সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার চলতে সক্ষম। চার্জিং স্টেশনে মাত্র ৩০ মিনিটে চার্জ হয়, আর বাসায় লাগে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সাফল্য অর্জন করেছেন মোস্তাফা আল মমিন। সিলিকন ভ্যালির ফাউন্ডার ইনস্টিটিউট এবং সিঙ্গাপুরের অ্যাকসিলারেটিং এশিয়া থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। সর্বশেষ সংযুক্ত আরব আমিরাতে অর্জন করেছেন মর্যাদাপূর্ণ ‘যায়েদ সাসটেইনেবিলিটি প্রাইজ ২০২৫’ (এক মিলিয়ন ডলার) ।

পালকি মোটরস শুধু বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করছে না, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, তরুণ প্রকৌশলী তৈরি এবং টেকসই পরিবহনব্যবস্থার মাধ্যমে এক নতুন শিল্পের ভিত্তি গড়ে তুলছে। মোস্তাফা আল মমিন প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশিরাও বিশ্বমানের উদ্ভাবন করতে পারেন।